নেত্রকোনা সোমবার, ৫ই মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২, ৭ জ্বিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ


মদনে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে গাছ কর্তন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মদনে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে গাছ কর্তন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ।। ছবিঃ নেত্র ভয়েস
মদনে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে গাছ কর্তন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ।। ছবিঃ নেত্র ভয়েস

নেত্রকোনার মদন উপজেলায় এক দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও মাদ্রাসা চত্বরে গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, উপজেলার বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আহসান উল্লাহ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ‘টি আর’ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ টাকার বরাদ্দ পান। তবে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে মাত্র ১৫-১৬ হাজার টাকায় মাদ্রাসার ভাউন্ডারিতে মাটি ভরাট এবং ১০-১২ হাজার টাকা অজুখানার পুরাতন কাজে ব্যয় করেই বাকি অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া, কোনো প্রকার কমিটির সিদ্ধান্ত বা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তিনি মনগড়াভাবে মাদ্রাসা চত্বরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কমিটি, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানান, “সুপার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই একক সিদ্ধান্তে কাজ করে যাচ্ছেন। মাদ্রাসার জন্য কী কাজ করা হবে, কত টাকা বরাদ্দ এসেছে—এসব আমাদের জানানো হয় না। তিনি কেন গাছ কেটেছেন, তা নিয়েও আমাদের কোনো ধারণা নেই।”

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সুপার আহসান উল্লাহ বলেন, “মাদ্রাসা আঙিনায় কিছু আগাছা ছিল, তা পরিষ্কার করেছি।” তবে গাছ কর্তনের বিষয়ে সরকারি নীতিমালা মেনে চলেছেন কিনা—এই প্রশ্নের কোনো সুস্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। টি আর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভাই, আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করব।”

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. কেশব মিয়া বলেন, “সুপার যে গাছ কেটেছেন, তা আমি জানতাম না, এখন শুনছি। বরাদ্দ পাওয়া টাকায় কী কাজ হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। একজন ভুল করলে সেটা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতেই হবে।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল বারী বলেন, “গাছ কাটার বিষয়টি আমি এখন শুনেছি। তবে এ বিষয়ে সুপার কোনো লিখিত আবেদন করেননি। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অলিদুজ্জামান বলেন, “বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া যদি গাছ কাটা হয়ে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ‘টি আর’ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের সত্যতা মিললে সেটিরও তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: